প্রকাশিত: Tue, Dec 12, 2023 10:37 PM
আপডেট: Mon, Jun 23, 2025 8:08 PM

বাংলাদেশ ইস্যুতে আগামীতেও যুক্তরাষ্ট্রের জুয়া খেলা বলবৎ থাকবে!

মিরাজুল ইসলাম : বাংলাদেশের গণতন্ত্র কিংবা বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থা নিয়ে ‘দিবা স্বপ্ন’ দেখা এখনো বন্ধ করিনি। কারণ কখনো চাইবো না বাংলাদেশ ক্রমশ চীন, সুদান, কঙ্গো, সিরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান কিংবা উত্তর কোরিয়ার মডেল অনুসরণ করুক। আগ্রাসী সাম্প্রদায়িক স্বৈরতন্ত্রের আড়ালে গণতন্ত্রের লেবাসধারী হলেও ব্যালট ভোটের চর্চায় অভ্যস্ত ভারতীয় মডেলে আপত্তি নেই। আপত্তি নেই লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মতো দুর্নীতিপরায়ণ গণতান্ত্রিক মডেলেও। কাঁচা টাকার গন্ধে নেশাগ্রস্ত তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ তাও টিকে আছে, আফ্রিকার গৃহযুদ্ধ আক্রান্ত দেশগুলোর মতো অবস্থা এখনো হয়নি। জিওপলিটিক্সে একটা বিশাল ‘কিন্তু’ আছে। যতই ইগনোর করুন, সেই কিন্তুর নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

জুয়া খেলা যাদের নাগরিক জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ। নিজ দেশে কালো টাকা সাদা বানানোর এই লিগ্যাল ব্যবস্থায় তাদের আস্থা অবিচল। আড়াইশ বিলিয়ন ডলারের জুয়া বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্র সযত্নে টিকিয়ে রেখেছে। প্রায় দুই মিলিয়ন মার্কিনির রুটি-রুজির সংস্থান হয় এতে। চীন-রাশিয়াও এখন সেই পথ ধরেছে। নিজ আদলে পুঁজিবাদ গড়ে তুলেছে। পুঁজিবাদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে এককভাবে ব্যবসা করতে দিতে রাজী নয় তারা। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের ইলেকশনে যুক্তরাষ্ট্র বাজি ধরেছিল। অনেকে ভেবেছেন হেরে গিয়েছিল। তা না হলে চীন-রাশিয়া এলো কোথা থেকে? এবারও জুয়ার বোর্ডে যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের পক্ষে-বিপক্ষে বাজি ধরেছে। তার উপর ভর করে আন্দোলনে সাহস পেয়েছিল বিএনপি এবং আওয়ামী বিরোধীরা। 

ধরে নিলাম, এবারও হারবে তারা। কারণ আপাতদৃষ্টিতে যে মডেলের ইলেকশন প্রস্তুতি চলছে তা মার্কিনিদের মনঃপুত হবে না। কিন্তু এরপর যা হবে তা নিয়ে যা ভাবছেন সেটা সত্য নাও হতে পারে। ফিদেল কাস্ত্রো যখন মার্কিন সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করেছিলো তখন জুয়ার বোর্ড, ক্যাসিনো আর গণতন্ত্রের ব্যালট বাক্স সব ফেলে আমেরিকা লিটারেলি পালিয়ে গিয়েছিল। ভিয়েতনামে পরাজয়ের প্রসঙ্গ নাইবা বলি। কিন্তু তারপরও কিউবা নিয়ে জুয়া খেলা বন্ধ হয় নাই। ভিয়েতনামের মং’দের সাথেও সন্ধি হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ইস্যুতে আগামীতেও যুক্তরাষ্ট্রের জুয়া খেলা বলবৎ থাকবে। মধ্যখানে কেউ জেনারেল ইবরাহিম সাহেবের মতো দলত্যাগী বেঈমান হবে। কিন্তু কিছু যায় আসে না ভাব করবে। কেউ আদর্শিক কিংবা দলীয় আনুগত্যের বিপ্লব চালিয়ে যাবে এবং কেউ কেউ ঝরে পড়বে। ঝরে পড়া শিউলি ফুলের কথা আজকাল কেউ মনে রাখে না। আগে তাও মালা-টালা গাঁথা হতো। আদর্শিক অবস্থান থেকে যদিও এমন পরিস্থিতি ভালো না।তাই কেউ কেউ এখনো স্বপ্ন দেখে জুয়া বোর্ডে একটা ভালো দান উঠুক কিংবা দেশটায় বহুদলীয় সুশাসন ফিরে আসুক। কিন্তু প্র্যাকটিক্যালি এর কোনোটাই আমি দেখতে পাচ্ছি না। লেখক ও চিকিৎসক